ফিরে দেখা করোনাকালীন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা
নিয়ামাতুল্লাহ আল মারুফ | প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২২
সময়টা ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর। এর মাঝে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে সকল ঋতুরই আগমন ঘটেছে কয়েকবার। তবুও করোনার কারনে বন্ধ হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালা খোলেনি। দীর্ঘদিন স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সবকিছুই বন্ধ থাকায় শিক্ষা ক্ষেত্রে ছিল স্থবিরতা। শিক্ষার্থীদের মাঝে ছিল উৎকন্ঠা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের অবস্থাও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেরিতে হলেও পর্যাক্রমে একাডেমিক কার্যক্রমকে অনলাইনে নিয়ে আসে। তবে একাডেমিক কার্যক্রমকে অনলাইনে নিয়ে আসা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। ডিভাইস জনিত জটিলতা থেকে শুরু করে নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যা, তার ওপরে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। সবকিছু মিলিয়ে অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে প্রথমে বেশ বেগ পেতে হয়।
তবে সময়ের সাথে সাথে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেটের বিশেষ সিম কেনার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে মোবাইল কেনা বাবদ বাছাই করা ৩৩০ জন শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা বিনা সুদে ঋণ প্রদান করা হয়।
করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে ক্লাস, রিভিউ ক্লাস এবং সবশেষ অনলাইনেই সকল বর্ষের প্রথম টার্মের পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় এবং খুব দ্রুতই ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে সকল বর্ষের ২য় টার্মের পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্শরীরে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করা হয়।
করোনা মহামারির ক্ষতি সামাল দিতে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দুটি টার্ম সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেমন প্রশংসার দাবিদার তেমনি শিক্ষার্থীদেরও মানিয়ে নিতে বেশ কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছিল।
পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সকল শিক্ষার্থীদের নূন্যতম এক ডোজ টিকার আওতায় আনা হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলগুলো ২০২১ সালের ১৭ই অক্টোবর খুলে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধির নিশ্চিত করার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিটি আবাসিক হলে আইসোলেশন রুমেরও ব্যবস্থা করা হয়।
বর্তমান সময়ে ক্লাস ও পরীক্ষা স্বাভাবিক সশরীরে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্শরীরে ক্লাস নেওয়া চলমান রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।
করোনাকালীন ক্ষতি পোষাতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষনীয়। স্নাতক ডিগ্রী বা অন্যান্য ডিগ্রী নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হওয়াতে অনেকেই ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত।
তবে গুণগত শিক্ষায় স্শরীরের ক্লাস ও পরীক্ষার বিকল্প নেই বলে মনে করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাই সকল বাঁধা কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকবে প্রতিটি ক্যাম্পাস এটাই সবার কামনা।