Friday, May 3, 2024
Friday, May 3, 2024

গবেষণায় কতটা এগিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়?

জেসমিন আক্তার প্রত্যাশা | প্রকাশ: ২৩ মে ২০২২

Share on facebook
Share on email
Share on print
Share on twitter
Share on whatsapp
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলা। ছবি: নিগার সুলতানা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর মাত্র ৪টি পাঠ্যবিষয়ে ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ৮টি স্কুল (অনুষদ) ও ২৯টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করার জন্য সঠিক শিক্ষা পদ্ধতির যেমন প্রয়োজন তেমনি আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদাপূর্ণ এবং দেশের কল্যাণে দিকনির্দেশনার জন্য নিরন্তর গবেষণার প্রয়োজন। তাই নতুন নতুন উদ্ভাবন এর মধ্য দিয়ে নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়েছে খুবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন । তারই ফলস্বরুপ সম্প্রতি এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স নামের আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থায় খুবির ২৯ জন বিজ্ঞানী ও গবেষক স্থান পেয়েছেন। সারাবিশ্বের ২০৬ দেশের ১৩ হাজার ৫৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত লক্ষাধিক বিজ্ঞানীর সাইটেশন এর ভিত্তিতে বিশ্ব বিজ্ঞানীদের নিয়ে তালিকাটি করা হয়।

এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন স্থান পেয়েছেন। তিনি খুবিতে কৃষি ও ফরেস্ট্রিতে প্রথম, দেশে চতুর্থ, এশিয়ায় ১৫১ ও বিশ্বে ৮২৫ তম স্থান লাভ করেন।

এছাড়া স্পেনের সিমাগো ল্যাব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস পরিচালিত বিশ্বের ৭ হাজার ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত (ইনডেক্স জার্নালভিত্তিক) জরিপে দেখা যায় আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে স্থান করে নিয়েছে খুবি। যা প্রমাণ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার দিক থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরলস গবেষণার মাধ্যমে খুবির অনেক গবেষণায় এসেছে সাফল্য। সম্প্রতি খুবির গবেষণায় দেশীয় ও গাড়ল জাতীয় ভেড়ার সংকরায়ণের সাফল্য মিলেছে। যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে সংকর জাতের ভেড়া পালনে দারিদ্র্য বিমোচন ও মাংসের চাহিদা পূরণের সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা।

পেয়াজ গবেষণাতেও এসেছে সাফল্য। উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতিতে পেয়াজ চাষ করলে বর্তমানের তুলনায় দিগুণ পেয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এছাড়া দাকোপের লবণাক্ত জমিতে বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম ফসলের চাষাবাদ এবং বটিয়াঘাটার ছয়ঘরিয়া গ্রামের পুকুরে গবেষণা চালিয়ে গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছে খুবির গবেষকরা। 

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধিতে গবেষণার বিকল্প নেই। যার কারণে বর্তমান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে আরও এগিয়ে যেতে পারে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা যাতে সঠিকভাবে গবেষণার কাজ বাস্তবায়ন করতে পারে এজন্য বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন অনুদানও প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত নয়। 

এ বিষয়ে ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোঃ আজহারুল ইসলাম জানান, ‘পূর্বের তুলনায় বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার দিক থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমরা যদি অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করি তাহলে কিন্তু আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের অনেক অনুদানের প্রয়োজন। গবেষণার জন্য নিত্য নতুন যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। গবেষণাগার প্রয়োজন যা আমারা এখনও পাইনি।’ 

তিনি আরো জানান, ‘সরকারি অনুদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠানেরও এগিয়ে আসতে হবে। গবেষণার সাথে যুক্ত হতে হবে। এর সাথে পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তাহলেই গবেষণার মাণ উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।’

Share on facebook
Share on email
Share on print
Share on twitter
Share on whatsapp

আরও পড়ুন