পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ওবিই কারিকুলা প্রণয়নে এগিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
অনিরুদ্ধ বিশ্বাস | প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) প্রথম সকল ডিসিপ্লিনের আউটকাম বেজড এডুকেশন (ওবিই) কারিকুলা প্রস্তুত করার কাজ শেষ হয়েছে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর— এই দুই পর্যায়ে ওবিই কারিকুলা তৈরীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (বিএসি) ‘অ্যাক্রিডিটেশন স্ট্যান্ডার্ডস্’— অর্জনে এক ধাপ এগিয়ে গেল।
বিএসি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং গৃহীত চর্চাগুলোকে সমন্বয় করে ১০টি মানদন্ড নির্ধারণ করেছে যাতে করে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সকল শর্ত পূরণ করে বিশ্বমান অর্জন করতে পারে। বিএসির নির্ধারিত ৪ নম্বর মানদন্ডটি হচ্ছে এই ওবিই কারিকুলা। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ, একাডেমিক কাউন্সিল এবং পরবর্তীতে সিন্ডিকেট প্রস্তাবিত কারিকুলাগুলো অনুমোদন দিলে ডিসিপ্লিনগুলো নতুন কারিকুলা অনুসরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) উদ্যোগে কবি জীবনানন্দ দাস একাডেমিক ভবনের সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের সম্মেলন কক্ষে ওবিই ভিত্তিক কারিকুলা টেমপ্লেট তৈরির বিষয় নিয়ে এ বছরের ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি প্রস্তাবিত ওবিই কারিকুলা নিয়ে প্রথম কর্মশালা সম্পন্ন করে। অবশেষে ২০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)— এর ওবিই কারিকুলা প্রণয়নের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ডিসিপ্লিন এবং মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টারের ওবিই কারিকুলা প্রণয়নের কাজ শেষ হলো।
আইকিউএসি সূত্রে জানা গেছে, ওবিই কারিকুলার মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কোর্স শেখানোর পরে কার্যকরী ফলাফল নিশ্চিত করা। প্রতিটি কোর্সের শিখনফল কিভাবে পুরো প্রোগ্রামের ( চার বছর মেয়াদী স্নাতক) লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখবে, প্রতিটি প্রোগ্রামের শিখনফল কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে ভূমিকা রাখবে— এই সকল দিক সমন্বয় এবং সংযোগ করে এই কারিকুলা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই কারিকুলায় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যেন শিক্ষার্থীরা শেখে সেদিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, বিষয়ভিত্তিক অংশীজন— শিক্ষক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, নিয়োগকর্তা এবং ওই বিষয়ভিত্তিক পেশায় দীর্ঘদিন আছে এমন ব্যক্তিদের মতামত নেওয়া হয়েছে যাতে করে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ পর্যবেক্ষণের প্রতিফলন নতুন কারিকুলায় থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার বলেন, “ওবিই কারিকুলা শিক্ষায় একটি নতুন ধারা নিয়ে আসবে, যা শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করবে। নতুন কারিকুলায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী— উভয়েরই মানিয়ে নিতে হবে, সকলকে অভ্যস্ত হতে হবে। অর্থাৎ, সামনে আমাদেরকে বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে হবে। আইকিউএসির এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে ওবিই কারিকুলা প্রণয়ন এক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু সকল ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে ও পরিশ্রম করে এই কাজটি সম্পন্ন করেছেন। আশা করা যাচ্ছে, সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে নতুন এই কারিকুলা অনুসরণ করে পাঠদান শুরু হবে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে আরও সমৃদ্ধ করবে।”