খুবির দু’বিঘা জমিতে বৃদ্ধ লুতফুরের জীবন সংগ্রাম
এস এম হামিম | প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২২
খুলনার পাইকগাছার কৃষক লুতফুর রহমান গাজী। বয়স ৭২ এর কাছাকাছি। ভারী কাজ করতে পারেন না। ছেলে মেয়ে থাকা সত্ত্বেও এ বয়সে তাকে পরিবারের খরচ যোগাতে হয়। তার এই জীবন সংগ্রামের একমাত্র অবলম্বন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাসের দুই বিঘা জমি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খান বাহাদুর আহছানউল্লা হলের সামনে থাকা দু’বিঘা জমি স্বল্প মূল্যে ইজারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করছেন তিনি। জানা যায়, গত দশ বছর যাবৎ এই জমিতে নিয়ম করে ফসল ফলিয়ে চলেছেন বৃদ্ধ লুতফুর। যা পূরন করছে তার নিজের এবং পরিবারের অর্থনৈতিক চাহিদা।
কথা প্রসঙ্গে লুতফুর রহমান গাজীর কাছ থেকে জানা যায়, দুই মাস আগে তার সহধর্মিণী অসুস্থ হয়ে মারা যান। স্ত্রীর অসুস্থার সময় তার চিকিৎসায় এ জমির আয় তাকে অনেক সাহায্য করেছে।
এবিষয়ে তিনি বলেন, “এই জমি টুক না থাকলে অনেক অসুবিধায় পড়তে হতো। এই জমির উপর নির্ভর করে শেষ বয়সে আমি ভালোই আছি”।
তার জামাই আরো কিছু জমি চাষের জন্য নিয়েছেন সেখানেও তিনি শ্রম দেন বলে জানান। বিধি মোতাবেক কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের মাধ্যমে জমিটি কৃষক লুতফুর রহমানকে ইজারা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে খান বাহাদুর আহছানউল্লা হলের সেকশন অফিসার মো. আক্তারউজ্জামান জানান, ‘বাৎসরিক সাত হাজার টাকায় জমিটি কৃষক লুতফুর রহমান গাজী কে ইজারা দেয়া হয়েছে। আর এ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনে হলের ফান্ডে জমা করা হয়।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অত্র অঞ্চলে সমপরিমাণ জমির বাৎসরিক ইজারা মূল্য এর প্রায় কয়েক গুণ বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কৃষক লুতফুর রহমান জানান, ‘সাক্ষাৎকার নেয়ার পর তাকে জমিটি ইজারা দেয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত এই জমিতে কৃষি কাজ করতে তিনি কোনপ্রকার প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হননি। পানি সেচ কিংবা জমি চাষের ভারী যন্ত্রপাতি আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয় তাকে।’