ক্যাম্পাস খোলার দিন গুনছে হলরোডের দোকানীরা
বিপুল শাহরিয়ার। প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে ময়ুর নদীর পশ্চিম তীর সংলগ্ন রাস্তাটি নামে ইসলামনগর হলেও শিক্ষার্থী ও স্হানীয়দের কাছে এটি হলরোড। এই হলরোডে খাবারের হোটেল, চায়ের দোকান, ফটোকপির দোকান, স্টেশনারি ও সেলুনসহ প্রায় ৮০ টিরও অধিক দোকান আছে। আর এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীদের যাবতীয় প্রয়োজন মেটায়।
হলরোডে গড়ে ওঠা এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্ভর। তাই করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করলে বন্ধ হয়ে যায় হলরোড সংলগ্ন এসব দোকান। কুরবানির ঈদের পর সীমিত পরিসরে কিছু দোকান খুললেও এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে শতকরা ৯০ শতাংশ দোকানপাট।
করোনা মহামারী প্রাদুর্ভাবকালীন সময়ে শিক্ষার্থী নির্ভর এই দোকানদারেরা দীর্ঘ বন্ধের কবলে পড়ে ভুগছেন চরম অর্থনৈতিক সংকটে। এমন সংকটকালীন সময়ে নিরুপায় হয়ে পড়া দোকানিদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন ও এলামনাই এসোসিয়েশন।
খান জাহান আলী হল গেটের বিপরীত পাশের প্রবীণ দোকানদার মো. আবু নাসের বলেন, করোনাকালীন সময়ে ৯৩’ব্যাচ থেকে আরম্ভ করে ২০’ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সর্বমোট এক লক্ষ চৌদ্দ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। যা অসচ্ছল দোকানদারদের মাঝে ত্রাণ ও নগদ অর্থ হিসেবে তারা বিতরণ করেছেন। তাতে তাৎক্ষণিক কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও মেলেনি স্হায়ী কোনো সমাধান।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাতীত প্রায় সব কিছু আংশিক ও বৃহৎ পরিসরে খোলার সিদ্ধান্তে অটল আছে সরকার। এমন অবস্থায় প্রায় সকল ক্ষেত্রে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমলেও কমেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক বেচে থাকা এসব মানুষের দূর্ভোগ। কারণ দোকান খোলা রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মিলছে না ক্রেতা। বন্ধ যত দীর্ঘ হচ্ছে ততই বাড়ছে হলরোডের দোকানদারদের দুর্ভোগ।
‘ভাই ভাই রেস্তোরাঁ’র মালিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ শীঘ্রই শেষ না হলে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে অনেক দোকানদার ও তাদের পরিবারকে। বন্ধকালীন সময়ে সরকারি কোনো সহয়তা তারা পেয়েছেন কিনা সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ব্যতীত অন্য কারও থেকে কোনো সহয়তা এখন পর্যন্ত তারা পাননি।
মহামারীকালীন দুর্যোগ শীঘ্রই শেষ হয়ে অতি দ্রুত ক্যাম্পাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন নিতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা তার। তবে যদি বন্ধ আরো দীর্ঘ হয় সেক্ষেত্রে সরকারি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ যেন তাদের বর্তমান বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেন সেই জোরালো দাবি জানান তিনি।