Friday, April 18, 2025
Friday, April 18, 2025

করোনায় প্রকৃতি যেন ফিরে পাচ্ছে তার স্বাধীনতা

রুকাইয়া কবির | প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০

করোনায় মানুষ যখন প্রাণের ভয়ে আচ্ছন্ন অন্যদিকে প্রকৃতি সেজে উঠেছে তার আপন সৌন্দর্যে। নেই মানুষের কোলাহল তাইতো প্রকৃতি নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছে। 

পরিবেশবিদদের বিক্ষোভ, রাষ্ট্রনেতাদের গালভরা বুলি আর জলবায়ুর সম্মেলনেও এতদিন যা সম্ভব হয়নি মহামারীর আতঙ্কে তা সম্ভব হয়েছে। একের পর এক শহর দেশ লকডাউন এর ফলে প্রতিদিনই কমছে দূষণের মাত্রা।

সকল কলকারখানাগুলোতে মুহূর্তেই তালা পড়ল তারই সাথে বন্ধ হল কালো ধোঁয়া আর বন্ধ হলো দূষণ।

রয়েল নেদারল্যান্ডস মেট্রলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (কে এন এম আই) সম্প্রতি পাল্টে যাওয়া ইউরোপের একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। তাতে স্পষ্ট নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড পরিবর্তন করছে গতিপথ এ কারণে দ্রুত গতিতে কমছে বাতাসে দূষণের মাত্রা। সারাবিশ্বে এক-চতুর্থাংশ যানবাহন চলাচলের পরিমাণ কমেছ। তারই সাথেই কমেছে যানবাহনের কালো ধোঁয়া যার ফলে কমেছে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা। পরিবেশ দূষণ কমেছে ৫ শতাংশ পর্যন্ত যা গেল ৭৫ বছরেও অসম্ভব। পৃথিবী আবারও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। 

করোনা আতঙ্কে মানুষ গৃহবন্দী থাকায় জলজ জীব এবং উদ্ভিদের উপর চাপ কমেছে আর প্রকৃতি ফিরে পাচ্ছে তার নিজগতি। সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠছে গাছপালা। ঝকঝকে রোদের সাথে দেখা মিলছে পরিষ্কার আকাশের। লোকালয়ে ফিরছে বিরল পাখি ও কীটপতঙ্গ।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে এক বছরে বিশ্বের ট্রাফিক কমেছে ৩৫%। নিউইয়র্ক আর দিল্লির মতো ব্যস্ত শহর গুলোর ১০ ভাগ নিম্নমুখী ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমাণ যার ফলে আবারো নিঃশ্বাস নেওয়া শুরু করেছে মৃতপ্রায় ধরিত্রী।

পর্যটকদের পদভারে ক্লান্ত ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। সেখানে এখন বাসা বেধেছে লাল কাঁকড়া সাগরলতা ও গাং কবুতরের দল। নদী-নালা খাল-বিল পুকুর গুলোর রং হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক। সূর্যের আলো যেন পানিতে ঝিলিক দিচ্ছে। অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মেট্রোপলিটন শহরেও সজীব নিশ্বাস নিচ্ছেন মানুষ যার পুরো কৃতিত্ব মহামারী করোনাভাইরাসের।

” পৃথিবীতে মানুষ বাঁচতে গিয়ে পৃথিবীটাকে দূষণ করে ফেলেছিল, কেড়ে নিয়েছিলো প্রকৃতির স্বাধীনতাকে। তাই পৃথিবী এবং প্রকৃতি বাধ্য হয়েছে এমন একটি চিত্র তুলে ধরতে যাতে করে মানুষ পৃথিবীর এবং প্রকৃতির দিকে ফিরে তাকায় এবং উপলব্ধি করতে পারে তাদের করা ভুলগুলো”- এমনটাই দাবি অনেক প্রকৃতিপ্রেমীর।

আরও পড়ুন