অফলাইন-অনলাইফে গাঁথা জীবনের বিপত্তিগুলো
ফাহমিদা মোহনা | প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
পড়ালেখা করে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ার ইচ্ছায়, পড়ালেখা করতেই গাছে উঠতে হচ্ছে আমাদের। বর্তমান করোনা মহামারির প্রকোপে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ক্লাসরুমে পাঠদান তার জায়গায় এসেছে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস, পরীক্ষা। সেখানেই বেধেছে যত বিপত্তি বিশেষত আমার মতো প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যাদের বসবাস। মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্যে যাদের ছুটতে হয় বাড়ির চৌহদ্দির বাইরে অনলাইন ক্লাসে সংযোগ পেতে তাদের গাছে না উঠে উপায় কি!
বলছি অনলাইন ক্লাস প্রক্রিয়ার একেবারে শুরুর দিকের কথা। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নেওয়া হলো ব্রডব্যান্ড সংযোগ, ভাবলাম এবারে একটু শান্তি। কিন্তু সে গুড়ে বালি দিয়ে এসাইনমেন্টের আগেরদিন একবেলা ঝড়ে দেড়দিন লোডশেডিং আমাকে বুঝিয়ে দিলো বাস্তবতা। গাছের পাতা নড়তেই যেখানে বিদ্যুৎ মহাশয় বিদায় নেন, সেখানে ক্লাসের মাঝে বিচ্ছিন্ন হওয়া নিত্য ঘটনায় রূপ নেয়।
এরমাঝেই আমার চারবছরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটা আর চাপ নিতে পারছে না বলে বিদায় নেয়। ভাগ্যিস ল্যাপটপটা তখনো সচল। কিন্তু বেশিদিন সেও ঠিক থাকলো না। এক বিকালে দেখলাম ওয়াইফাই এডাপ্টর কাজ করছে না। সেই সময় শহরে গিয়ে ঠিক করার চেয়ে একটা নতুন ফোন কেনাই বাবার কাছে সহজ মনে হলো।
অনেক বছর পর এত লম্বা সময় বাড়িতে থাকতে যেমন হাঁপিয়ে উঠতে হয়েছে, সাথে বেড়েছে খিটখিটে মেজাজ, বেড়েছে কাছের মানুষদের সাথে সম্পর্কের তিক্ততা। এতসব বিবেচনায় খুলনায় এসে বাসাভাড়া নেওয়ার পর মনে হচ্ছিলো এবার অন্তত স্বস্তি আসবে। অনেক সমস্যা বিশেষত যান্ত্রিক সমস্যার সমাধান হলেও সমাধান হয়নি মানসিক অবসাদের। প্রতিনিয়ত যেন গ্রাস করে চলেছে আমাদের। বাড়াচ্ছে হতাশা হারিয়ে ফেলছি কাজ করার স্পৃহা কোনো কিছুতেই নেই আগের সেই স্বতঃস্ফুর্ততা।
লেখক: শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।