গণমাধ্যমে কর্মী ছাঁটায়ের প্রতিবাদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
ইবনুল হাসান। প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২০

গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ নানান অজুহাতে ছাঁটাই করছে। তাদের এমন অমানবিক কাজের প্রতিবাদে গতকাল (রবিবার) বিকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে উপস্থিত খুবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মৌসুমি আফরোজ বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের এই অমানবিক ছাঁটাইয়ের তীব্র প্রতিবাদে আজ আমরা এখানে মানববন্ধন করছি। যতদিন এই কর্মী ছাটাই বন্ধ না হবে ততদিন আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে।
শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, গণমাধ্যম কর্মীরা জীবন ঝুঁকি রেখে কাজ করে কিন্তু তাদের কাজের তেমন কোন মূল্যায়ন পায় না। এই পেশায় গণমাধ্যম কর্মীরা নিজেদের ভাই বলে সম্মোধন করলেও আজ বিপদের সময় ভাই তার ভাইকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আয়োজিত মানববন্ধনে খুবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষকরা সংহতি জানান।
এসময় উপস্থিত উক্ত ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শরীফুল ইসলাম বলেন, মাথা ব্যাথার সমস্যা মাথা কেটে ফেলা হতে পারে না। প্রকাশক ও মালিকপক্ষের উদ্দ্যেশে বলবো, গণমাধ্যম কর্মী ছাঁটাই না করে আপনারা বেতন কমিয়ে দিন, পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে দিন, ব্যয় সংকোচন করুন। প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে আলোচনায় বসুন কিন্তু এই অমানবিকতা বন্ধ করুন।
একই ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশীদ বলেন, মালিক-সম্পাকদের বলবো আপনার ব্যয় সংকোচন নীতি মেনে চলুন প্রয়োজনে একদিন পত্রিকা ছাপা বন্ধ রাখুন কিন্তু গণমাধ্যম কর্মী ছাঁটাই বন্ধ করুন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পেশায় কখনই আসতে চাইবে না।
মানববন্ধনে আরো বক্তৃতা রাখেন খুবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ, প্রভাষক মাজেদুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ইয়াছিন আহমেদ জীবু, শিক্ষার্থী ইমরান ইসলাম মামুন, খুবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর হাসিব।
সম্প্রতি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ইত্তেফাকসহ বেশ কিছু প্রধান সারির মিডিয়া হাউজগুলো করোনা মহামারিতে পত্রিকার সার্কুলেশন কমে যাওয়া, বিজ্ঞাপন না পাওয়া, লোকশান হওয়াসহ নানা অজুহাতে গণমাধ্যম কর্মীদের ছাঁটাই করেছে এবং করছে।
বিজিএস (বাংলাদেশ গণপমাধ্যম সেন্টার) এর তথ্য জরিপ মতে গত সাত বছরে এস এ টিভি ৫০০ কর্মী সাটাই করেন।যেখানে বেশিরভাগই সিনিয়র সাংবাদিক সাটাই এর তালিকায় ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মী এমন ছাটাই এর প্রভাব ফেলছে সংবাদের মান ও বিষয়ের উপর। হারাচ্ছে অনেক মেধা। নিশ্চয়তার আতঙ্কে আছেন চলমান সাংবাদিকগণ ও ভবিষ্যৎ সাংবাদিকগণ।
খুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত ছিলেন। তারা মনে করেন বাংলাদেশের সর্বোত্ত এই ঘৃণ্য কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত। অবিলম্বে গণমাধ্যমের সাথে জড়িত মালিক-সম্পাদকসহ সকল পক্ষকে আরো বেশি মানবিক ও এই পেশাকে বাঁচাতে ব্যয় সংকোচন সহ ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের আহবান জানানো হচ্ছে। একই সাথে দেশের সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন, সরকার তথা রাষ্ট্রকে যথাপোযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।